আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আসি কেমন হয়েছে।

সেদিন সকালে, আমি কিছু প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করার জন্য ঘর থেকে বেরিয়েছিলাম। হাতে ব্যাগ, মাথায় হালকা রোদ, আর মনে এক ধরণের প্রশান্তি। কোথাও কোনও তাড়াহুড়ো ছিল না, তবে কোনও কারণে দিনটি অন্যরকম অনুভূত হয়েছিল। আমার পা ধীরে ধীরে চলতে থাকলেও, আমার চোখ খোলা ছিল - দোকানগুলি, রাস্তার ধারে বসে থাকা ফুল বিক্রেতারা, ব্যস্ত মুখগুলি, সবকিছুই যেন অন্যরকমভাবে ধারণ করছিল। ঘুরে বেড়াতে ঘুরতে অবশেষে আমি পাশের একটি রাস্তায় পৌঁছে গেলাম, যেখানে দোকান জুড়ে একটি রঙিন কৃত্রিম ফুল সাজানো ছিল। মনে হচ্ছিল যেন কেউ রঙ দিয়ে আঁকা একটি বাগান সাজিয়েছে। রঙিন সব ফুল - পাতা, সূর্যমুখী, গোলাপ, অজানা নীল রঙের ছোট ছোট ফুল - সবই চোখ ধাঁধানো ছিল। হঠাৎ, আমার মনে হল এই দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণ করা দরকার। আমি আমার মোবাইল বের করে প্রতিটি ফুলের ছবি তুললাম।

আমি প্রথম যে ছবিটি তুলেছিলাম তা ছিল হলুদ সূর্যমুখীর একগুচ্ছ। সেগুলো ছিল সূর্যের মতো উজ্জ্বল, কৃত্রিম অথচ জীবন্ত। তারপর পাতার ঘন সবুজ পাতার মাঝে লুকিয়ে থাকা একটি গোলাপের ছবি তুললাম। এরপর, একের পর এক... আমি থামতে পারলাম না। কিছুক্ষণ পর দোকানদার কাকা এসে বললেন, “আপা, ছবি তোলার দরকার নেই, আমি একটু ব্যস্ত।” আমি হেসে বললাম, “আমি শুধু দেখছি, কাকা, আপনার দোকানটি খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।” কিন্তু তার মুখে স্পষ্ট বিরক্তি ছিল। আমি বুঝতে পারলাম যে হয়তো তার আগেও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে, অথবা সে ভেবেছিল ছবিগুলো অন্য কোথাও ব্যবহার করা হবে।

আমি একটু লজ্জা পেলাম, আর কষ্টও পেলাম। আমরা যারা ছবি তুলতে ভালোবাসি, তাদের জন্য এইরকম অবাঞ্ছিত 'না' বলাটা মাঝে মাঝে খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তবুও, তার কথার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি আমার মোবাইল ফোনটি নামিয়ে রাখলাম। দোকানে আরও অনেক ফুল ছিল যেগুলোর ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তুলতে পারিনি। যাইহোক, ছবি না তুলেও, আমি আমার চোখ দিয়ে অনেক কিছু দেখেছি। সেখানে একগুচ্ছ ফুল ছিল যা দেখে মনে হচ্ছিল যেন কেউ একের পর এক পাপড়ি যত্ন সহকারে সাজিয়ে রেখেছে। সেগুলো কেবল প্লাস্টিক এবং রঙ ছিল না, বরং আবেগ ছিল। ছোট নীল ফুলের একটি তোড়া ছিল, যা আমাকে আমার স্কুলের দিনগুলিতে আঁকা জলরঙের বাগানের কথা মনে করিয়ে দেয়।

এই দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়, একটি ছোট্ট মেয়ে তার মায়ের হাত ধরে বলল, "মা, আমি ওই গোলাপটা চাই!" মা একটু হেসে বললেন, "ওটা কি আসল না মা? এটা একটা খেলনা ফুল।" তারপর মেয়েটি চিৎকার করে বলল, "কি ব্যাপার, এটা দেখতে সুন্দর!" এই একটি বাক্যই যেন সব বলে দিচ্ছে। ফুলটি আসল নাকি নকল, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো এটি কীভাবে কাউকে খুশি করে, মোহিত করে এবং স্মৃতি তৈরি করে।

সেদিন ফুলের দোকানে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল জীবনটাও এরকমই। অনেক কিছুই হয়তো সত্য নয়, বাস্তব নয়, কিন্তু সেগুলো আমাদের মনে প্রভাব ফেলে। কিছু অনুভূতি কাল্পনিক হতে পারে, তবুও সেগুলো আমাদের গভীরভাবে নাড়া দেয়। এই কৃত্রিম ফুলগুলোও তেমনই। এগুলো হয়তো কখনো সুগন্ধ ছড়ায় না, কিন্তু এগুলো রঙ ছড়ায়, সৌন্দর্য ছড়ায় এবং আমাদের ভালো বোধ করায়। কখনও কখনও মানুষ ঠিক এই ফুলের মতোই হয়—নীরব, কিন্তু রঙিন। হয়তো এরা মুখে কিছু বলে না, কিন্তু তাদের উপস্থিতি দিয়ে পরিবেশ বদলে দেয়।

সেদিন অনেক ছবি তুলেছিলাম, কিন্তু সব ছবি আমার মোবাইলে ছিল না। কিছু ছবি আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল—দোকানদারের চিন্তাভাবনা, সূর্যমুখীর উজ্জ্বলতা, শরতের পাতার ঘন সবুজ পাতায় জমে থাকা ধুলো, আর সেই ছোট্ট মেয়েটির সরল আবেগ।

বাড়ি ফিরে মোবাইল খুলে ছবিগুলো দেখলাম। সত্যি বলতে, সেই সময়টা আমার কাছে ওই কয়েকটা ছবির চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে—যখন আমি ছবি তুলছিলাম, আবার অনিচ্ছাকৃতভাবে থেমে ফুলের ভেতরের গল্পটা অনুভব করছিলাম। প্রতিদিন, আমাদের চারপাশে এমন কিছু দৃশ্য থাকে যা আমরা বুঝতে পারি না বা ধরতে পারি না। কখনও কখনও আমরা ছবি তোলার সাহস করি, কখনও কখনও চুপচাপ দেখি। কিন্তু যদি আমরা সেই মুহূর্তটিকে ভালোবাসি, যদি আমরা সেই সৌন্দর্য অনুভব করতে পারি, তাহলে সেটা অনেক। মোবাইল ফোনের ছবির চেয়ে অনুভূতির ছবি অনেক বেশি স্থায়ী। সেদিন আমি খুব অল্প সময়ের জন্য সেই ফুলের দোকানে ছিলাম। আমি কিছু ছবি তুলেছিলাম, কিছু তুলিনি। কিছু কথা শুনেছিলাম, কিছু বলিনি। কিন্তু সেই দোকানের রঙ, আলো, নিষেধাজ্ঞা, বাচ্চার কৌতূহল এবং আমার নিজের পছন্দ—সব মিলে সেই দিনটিকে আমার জন্য একটি নীরব অভিজ্ঞতা করে তুলেছিল। এমন একটি অভিজ্ঞতা যা ছবির বাইরেও আমার স্মৃতিতে রয়ে গেছে।

বিষয় | ফটোগ্রাফি |
---|---|
ডিভাইস | Oppo-A16 |
ফটোগ্রাফার | @mahfuzanila |
ভৌগলিক অবস্থান | বাংলাদেশ |
আর্টিফিসিয়াল ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। চমৎকার সব ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আপনি দারুন সব ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো উপস্থাপন করেছেন আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আর্টিফিশিয়াল ফুল গুলো দেখতে এত সুন্দর। যে দেখলে মনে হয় বাস্তব ফুলের মত। খুব সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার শেয়ার করা ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এ ফুলগুলো ঘরে সাজিয়ে রাখলে ঘরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।এত সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু অনেক জায়গাতে এখন আর্টিফিশিয়াল ফুল গুলো বিক্রি করা হয় । তবে আপনি দেখছি বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। কৃত্রিম প্রকৃতির এই ফুলগুলো দিয়ে ঘর সাজালে খুব চমৎকার হয়। আর এই ফুল গুলো সহজে নষ্ট হয় না। যাইহোক বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit