ট্রাভেল পোস্টঃ সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরি ভ্রমণ।

in hive-129948 •  8 months ago 
Picsart_24-12-03_10-26-46-475.jpg

আজ - শুক্রবার

১৭, অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

সবার সুস্থতা কামনা করে আজকে আমি আমার আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করছি।আশা করি আমার আজকের এই পোস্টটি আপনাদের বেশ ভালোই লাগবে। আমি আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন,নতুন পোস্ট করে থাকি কখনো ফটোগ্রাফি পোস্ট করি। কখনো ট্রাভেল পোস্ট করি কখনো রিসিউ,করি এছাড়া জেনারেল রাইটিং এর মত পোস্টগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করি। আমি যখন লাইফ স্টাইল পোস্ট গুলো শেয়ার করি তখন আমি যদি সিরাজগঞ্জে তাঁত শিল্পের বিষয়টা ভিতরে চলে আসে তখন হয়তোবা আপনাদের শেষ পর্যায়ে বলে থাকি যে একদিন সময় করে আপনাদেরকে সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরি ভ্রমণ করিয়ে দেখাবো। তো আমার পোস্টগুলো যারা নিয়মিত ফলো করেন তারা হয়তো এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকবেন। আজকে বিকেল বেলায় আমি এবং আমার একটা কাছের ভাই রবিউল দুজনে মিলে সিরাজগঞ্জের ঘুরে দেখছিলাম যে এখানে কোন কোন জিনিস গুলো ভালো হয়ে থাকে এবং এখানকার মানুষের জীবিকা পরিচিতি ইত্যাদি সম্পর্কে একটু ব্যক্তিগত এক্সপেরিয়েন্স নিচ্ছিলাম। ঠিক তখনই রবিউল ভাই ওনার পরিচিত একজনের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল এবং ওনার কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে আমাকে নিয়ে গেল।

IMG_20241202_155003_774-01.jpeg

আসলে এই তাদের ফ্যাক্টরি সম্পর্কে আমি রবিউল ভাইকে আগেই বলে রেখেছিলাম যে সিরাজগঞ্জেতে এমন তাঁতের শিল্পের অনেক প্রভাব রয়েছে এবং এটির উপরে অনেক মানুষ নির্ভরশীল তো এই সম্পর্কে আমি একটা ব্লগ করতে চাই আপনি যদি পারেন তাহলে আপনার পরিচিত কোন একজন তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরিয়ালার সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েন তাহলে আপনার সঙ্গে একটু পরিচিত হয়ে উনার ফ্যাক্টরিতে ঘুরে আসবো এবং কিছু ব্যক্তিগত এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে আসব। তো সেদিনটা আজকে চলে আসলো, প্রথমে উনার সঙ্গে পরিচয় হলাম উনি জিজ্ঞেস করছিলেন আমি কোথা থেকে এসেছি আমি বললাম আমার বাসা অনেক দূরে আমি মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট একজন ছাত্র। তোর ডিপ্লোমার স্টুডেন্ট পরিচয় দেওয়ার মাত্র উনি যেন আমাকে কেমন একটা আপন চোখে দেখলেন এবং উনার ফ্যাক্টরিটা নিজে গিয়ে আমাকে ঘুরিয়ে দেখালেন। জায়গাটি খুবই সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ ছিল প্রথমে ওখানে প্রথমে ঢুকেই কয়েকটা ফুল গাছ চোখে পড়ল খুব সুন্দর করে বিভিন্ন জাতের ফুল গাছ আশেপাশে লাগিয়ে পরিবেশটাকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

IMG_20241202_155211_859-01.jpeg

তো ফ্যাক্টরির ভিতর ঢুকতেই কানের টকটক শব্দ আসতে শুরু করল ওখানে মানুষ কেউ কাপড় তৈরি করছে কেউ কাপড় কেচি দিয়ে কাটতেছে আবার কেউ সুতা এক জায়গায় গুছিয়ে রাখছে তো ওখানে গিয়ে মোটামুটি এই দৃশ্যগুলো চোখে পড়ল। আসলে আমাদের ওদিকে তাঁত শিল্পের তেমন একটা প্রভাব নেই যার কারণে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমি একেবারেই অপরিচিত ছিলাম তো আজকে এই বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারি নিজের কাছেও বেশ ভালো লাগছে আর আপনাদের কাছে শেয়ার করেও অনেক বেশি প্রশান্তি পাচ্ছি। তাচ্ছিল্য কিন্তু আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা শিল্প কারন এই শিল্পের উপরেই বাংলাদেশের একটা বড় ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেম অতিবাহিত হচ্ছে। আপনারা হয়তোবা জেনে থাকবেন যে বাংলাদেশ প্রতিবছরই এই তাঁত শিল্পের পোশাকগুলো আমদানি রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা বিষয়। তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম যে হয়তো বা দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি পরিষ্কার করা হয় নাই কারণ জায়গাটাতে অনেক ধরনের মাকড়সার ঝুল ছিল। ভিতরে থাকাটাই মুশকিল।

IMG_20241202_155024_322-01.jpeg

বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্ট সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই কাজটা করার একটু কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তবে বাজারে যেহেতু এই শিল্পীর অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে তাই বুঝতে পারলাম যে এরা সব সময় কাজের মধ্যেই থাকে বাইরের দুনিয়াতে কি হচ্ছে না হচ্ছে তেমন কোন এদের অফিস থাকে না কারণ আশপাশের মানুষের কাছ থেকে যা আর শুনতে পেলাম সেটা হচ্ছে এরা সকাল নয়টার দিকে আসে এবং দুপুরে একবার রেস্ট নেই আবার দুপুরের পরে কাজে বসে এবং রাত থেকে বাড়িতে যাই অর্থাৎ দিনের প্রায় 80% সময় এরা কাজ করে। আর আমরা সবাই জানি যে যে জাতি যত পরিশ্রম সে জাতি তত উন্নত তবে এনারা যত পরিশ্রম করে সেই অনুযায়ীদের পারিশ্রমিক তুলনামূলক অনেকটাই কম। তবে বিভিন্ন পেশার মানুষ এখানে জড়িত রয়েছে এবং বাংলাদেশের কাজের অভাব থাকার কারণে এই গার্মেন্ট সেক্টরে বেশি বিপুল পরিমাণের মানুষ কাজ করে থাকে এবং এখান থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আর আমরা সবাই জানি যে কোন কাজে ছোট না যে যত কাজ করবে সে তার জীবনে তত বেশি উন্নত করবে।

IMG_20241202_155130_637-01.jpeg

তবে শেষে বেশ ভালো এক্সপেরিয়েন্স হল এবং অনেক ধরনের সুতা সম্পর্কে জানতে পারলাম এবং কিভাবে এই বিজনেসটা করা হয় এক্সপোর্ট করা হয় ইমপোর্ট করা হয় সে সম্পর্কেও মোটামুটি একটু ধারণা পেয়েছি। সত্যি বলতে যা বুঝতে পারলাম যে এই ব্যবসাতে বেশ ভালই মুনাফা অর্জন করা সম্ভব তবে এখানে ইনভেস্টমেন্ট অনেক বড় হওয়া প্রয়োজন তাহলে আপনি এখান থেকে ভালো কিছু করতে পারবেন। আর যেহেতু এটা ব্যবসা তাই লস এর একটা আশঙ্কা থেকেই যাই কারণ যদি কোন ব্যবসাতে শুধু লাভ হয় তাহলে সেই ব্যবসাটা ইসলামের দিক থেকে হালাল ভাবে দেখা হয় না। কারণ ব্যবসাতে লাভ এবং লস দুইটাই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তো এবার সাথে বুঝতে পারলাম প্রায় ৭৫% লাভ হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাকি ২৫ পার্সেন্ট লস হওয়া সম্ভবনা রয়েছে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারাই ব্যবসা করেন তারা লাভবান হয়। তারা যদি কোন ফিজিক্যাল ক্ষতিস সম্মুখীন না হয় বিশেষ করে হঠাৎ মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়া বা বিদ্যুতের কোন সমস্যা হওয়া এ বিষয়গুলো তারা এড়িয়ে চললে মাসে সে একটা ভালো পরিমাণ মুনাফা তারা অর্জন করতে পারে।

IMG_20241202_155037_836-01.jpeg

তো মোটামুটি অনেক এখন ঘোরাঘুরি করার পরে এই এক্সপ্রেস টুকুই আজকে নিতে পেরেছি এবং আপনাদের কাছে এগুলো শেয়ার করতে পেরে আমার নিজের কাছেও বেশ ভালো লাগছে। আসলে আমাদের সবসময় ব্যবসার দিকে ঝুকে যাওয়া উচিত কারণ পৃথিবীতে যত ধনী ব্যক্তি রয়েছে তারা প্রায় ৯৫% ব্যবসায়ী ছিল। তাই আমরা বুঝতে পারছি যে ব্যবসার পিছনে অনেক বড় একটা ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেম কাজ করছে তাই আমাদেরকে এই দিকে ধাবিত হওয়া উচিত এবং নিজেই কিছু করা উচিত।। ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষণ পাশে থেকে আমার ছোট্ট এই ব্লডটা উপভোগ করার জন্য আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

ক্রোমব্লগার@emonv
ডিভাইসTecno camon 20
শ্রেণীট্রাভেল পোস্ট
লোকেশনবেলকুচি, সিরাজগঞ্জ

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000004142.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আমাদের সিরাজগঞ্জ তাঁত শিল্পের জন্য অনেক বিখ্যাত।দেশ ও দেশের বাইরে এসব পণ্য সরবরাহ করা হয়।এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প অনেক বড় একটি ভূমিকা পালন করছে।আপনি এবং আপনার বন্ধু সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরি ভ্রমণের খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত এবং বিস্তারিত আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

এরকম কিছু ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে যেগুলোতে গেলে অনেক ভালো লাগে। আমরা অনেক ধারণা নিতে পারি অনেক বিষয় সম্পর্কে। আপনি তো দেখছি সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরিতে ভ্রমণ করেছেন। বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি ওখান থেকে। সব মিলিয়ে আপনার আজকের পোস্টটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।

আজকে দেখছি আপনি আমাদের মাঝে সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরি ভ্রমণ করেছেন এবং সেটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলে সত্যি বলতে আমিও একজন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালোবাসি আমি। সিরাজগঞ্জ তাত শিল্পের জন্য বিখ্যাত।

আপনার ঘুরাঘুরির মুহূর্তটি অনেক সুন্দর ছিল। ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলেন দেখছি। আর জায়গাটার সবকিছু আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখতে আমার অনেক ভালো লেগেছে। এত সুন্দর করে বিস্তারিত আমাদের মাঝে এটা উপস্থাপন করলেন দেখে খুব ভালো লাগলো।