Incredible India poetry contest | week 2 hosted by: @mamun123456 Topic: "memories and time"

in hive-120823 •  25 days ago 
Add a heading_20250701_130636_0000.jpg

Hello Everyone,,,

আশা করি, সকলে অনেক ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। প্রথমেই আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের কমিউনিটির সম্মানিত সদস্য @mamun123456 ভাই কে।

প্রথম সপ্তাহ পার হওয়ার পর @mamun123456 ভাই, আমাদের জন্য আবারও নতুন একটা কনটেস্টে আয়োজন করেছেন। এবারের কনটেস্টের বিষয়বস্তুও আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় লেগেছে তাই আগে ভাগেই আপনাদের অংশগ্রহণ করতে চলেছি।

তবে তার পূর্বে আমি আমার কয়েকজন বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাতে চাই কনটেস্টে অংশগ্রহণের জন্য,

@karobiamin71, @samima1 @muktaseo

pexels-pixabay-160422.jpgSource

আমি জানি, আজকের পোস্টটা যখন লিখতে শুরু করবো তখন ধীরে ধীরে যতই লেখার গভীরে প্রবেশ করবো ততই আমার মন খারাপ হতে থাকবে। তবে তারপরও আমি আমার জীবনের এই স্মৃতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

আজকের কনটেস্টে বিষয়বস্তু হলো স্মৃতি। তাই আমিও আমার জীবনের একটা স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।

এই স্মৃতিটা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এই মুহুর্তটা আমাকে শিখিয়েছে পরিবারের প্রতি ভালোবাসা, শিখিয়েছে প্রিয়জন হারানোর অনুভূতি!

অদ্ভুত লাগছে শুনতে তাই না!

সালটা তখন ২০১৭। প্রতিদিনের মতো সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়িত থেকে অনেক দুরে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছি। প্রাইভেট পড়তে খুব সকালে যেতে হতো। সেখানে সকাল ৭ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত অংক এবং ৮ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত ইংরেজি পড়তে হতো। তারপর এক ঘন্টার মধ্যে বাড়িতে এসে আবার ১০ টা থেকে স্কুলের ক্লাস করতে হতো।

যাই হোক, সব কিছু অন্য দিনের মতো ছিলো। তবে সেদিন যখন অংক প্রাইভেট পড়া শেষ করে ইংরেজি পড়া শুরু করেছি, কিছুক্ষণ পর বাড়ি থেকে বাবার ফোন আসলো। ফোনের ওপার থেকে বাবা বললো - তোর দাদুর অবস্থা বেশি ভালো না, তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আয়

কথাটা শুনে যেন আমার মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা। বেশ কয়েকদিন আগে থেকে দাদু ভীষণ অসুস্থ হয়েছে। তাই এমনটা আগে থেকেই অনুমেয় ছিলো তবুও কেন জানি হতভম্ব হয়ে যাওয়ার অবস্থা।

দেরি না করে স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম৷ আমি সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করতাম। সাইকেলে উঠে তাড়াতাড়ি বাড়ি আসার চেষ্টা করছিলাম তবে মনে হচ্ছিলো পথ যেন অন্য দিনের তুলনায় লম্বা হয়েছে। আমার শুধু মনে হচ্ছিলো দাদুর সাথে কি শেষ বারের মতো কথা বলতে পারবো?

শেষমেশ আমি বাড়ি পৌঁছে দেখি আমাদের বাড়িতে অনেক মানুষের ভীড়। মা বাবা ও আমার অন্য জেটুরা দাদুর পাশে বসে আছে। সবার চোখে জল। শাস্ত্রে বলে মানুষের মৃত্যুর সময় কান্না করতে হয় না তবে প্রিয়জন হারানোর কষ্টে সবার চোখ দিয়ে না চাইতেই জল চলে আসে।

আমি যখন পৌঁছেছিলাম তখন দাদুর শ্বাস বইছিলো। শেষ বারের মতো দাদুকে জল খাওয়ালাম। আমি দাদুর পাশে বসতেই দাদু আমার দিকে তাকালো, দাদুর চোখেও জল, দাদু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। সেই মুহুর্তে যেন, এতদিনের সকল স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলো।

একটা সময় দাদু আমাদের সবাইকে কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু বলতে পারছিলো না। দাদুর গলায় সর্দি আটকে গিয়েছিলো গলা দিয়ে স্বর বেরো হচ্ছিলো না।

pexels-simlibas-12980935.jpgSource

দাদু তখন ইশারায় খাতা আর কলম চাইলো। দাদুকে খাতা আর কলম দিতেই দাদু উঠে বসার চেষ্টা করলো, তখন সবাই মিলে দাদুকে একটু উঠে বসানোর চেষ্টা করলো। তখন দাদু তার কাঁপা হাত দিয়ে লিখলো - সবাই একসাথে ,,,,,

তারপর আর লিখতে পারেনি। হয়ত বলতে চেয়েছে যেন আমরা সবাই একসাথে মিলে থাকি। যদিও লেখাটা এলোমেলো ছিলো আর এটাই স্বাভাবিক!

সুস্থ অবস্থায় দেখেছি দাদুর হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিলো। সবাই হয়ত অবাক হচ্ছেন যে, কিভাবে দাদু মৃত্যুর খানিক আগে এভাবে লিখলো! আমি নিজেও জানি না! আমরা সবাই অবাক হয়েছিলাম কারন আজ পর্যন্ত এমন ঘটনা দেখিনি।

আমি আপনাদের আগেও বেশ কয়েকটা পোস্টে বলেছি, আমার দাদু ভীষণ ঠাকুর ভক্ত ছিলো, মুখে সব সময় কৃষ্ণ নাম।

মানুষ যেমন কর্ম করে তেমনই ফল পায় এটা সকল ধর্মেই রয়েছে। তবে হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র মতে, এমন কিছু তিথি আছে যেই তিথিতে যদি কেউ মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে স্বর্গলাভ করে।

আমার দাদু, দক্ষিণায়ন কৃষ্ণপক্ষ তিথি তে মৃত্যুবরণ করেন। ঈশ্বরের কৃপা না থাকলে এই তিথিতে মৃত্যু বরণ করা সম্ভব নয়।

অনেকেই ভাবতে পারেন, আমি দাদুর কথা কেন বলছি, ঠাকুমার কথা কেন নয়?

সত্যি বলতে, দাদুর শেষ সময়ে আমি তার পাশে ছিলাম কিন্তু ঠাকুমা মাঝ রাতে মৃত্যুবরণ করেছিলো। সেই মুহুর্তে বাবা মা ঠাকুমার পাশে থাকলেও আমি তার খানিক আগেই ঘুমিয়েছিলাম।

নিজের চোখের সামনে পরিবারের সব থেকে বড় স্তম্ভকে মৃত্যুর কাছে হার মানতে দেখেছি যে মুহুর্তটা মনে পড়লে আমার চোখে না চাইতেও জল চলে আসে। কিছু কিছু মুহুর্ত আমাদের রক্তের সাথে মিশে যায়!

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। সত্যি কথা বলতে মানুষ তার জীবনে এই মানুষটাকে অনেক বেশি মনে রাখে যে মানুষটাকে সে অনেক বেশি ভালোবাসে আপনার দাদু যখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছিল তখন আপনি তার পাশে থাকতে পেরেছেন এটাই হচ্ছে সবচাইতে বড় কথা। সত্যিই আমি অবাক হয়েছি আপনার দাদু কিভাবে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে খাতা-কলমে লিখেছিল। তিনি হয়তো বা আপনাদের কে বোঝাতে চেয়েছে আমরা সবাই যেন মিলেমিশে একসাথে থাকেন যাতে করে তার পরিবারে কোন সমস্যা না হয়। যাইহোক প্রতিযোগিতায় আপনার সফলতা কামনা করছি ভাল থাকবেন। প্রিয় মানুষের সম্পর্কে লিখতে পেরে নিশ্চয়ই আপনার মনে কিছুটা প্রশান্তি এসেছে। যতটুকু আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে বুঝতে পারলাম।

Loading...
Loading...

cover-image07.jpg

Thank you very much for your support.