নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আজকের বিশেষ দিনটির কিছু মুহূর্ত শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
কিছুদিন আগের একটি পোস্টে, প্রথমবার আমার কাকী শ্বাশুড়ি এবং তার মেয়েদের সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত গুলি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। সেই সাথে এটাও বলেছিলাম যে যেদিন ওদের সাথে প্রথমবার দেখা হয়েছিল, সেদিন ছিল আমার কাকী শ্বাশুড়ির দুই মেয়ের জন্মদিন। দুই মেয়ের একই দিনে জন্মদিন হলেও ওদের মধ্যে দুই বছরের পার্থক্য রয়েছে। যাইহোক, এই ব্যাপারটা বেশ মজার লেগেছিল যে সহোদর দুই বোনের বয়সের পার্থক্য দুই বছর হলেও ওদের জন্ম তারিখ একই। তাই প্রতিবছর ওদের জন্মদিন একই সাথে পালন করা হয়। ঠিক একই রকম ভাবে আজকেও ছিল ওদের জন্মদিন।
যেহেতু বড়দির বিয়ে হয়ে গেছে। তাই এই বছর শুভায়ন, মানে আমার হবু বর সকাল সকাল ওদের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিল। কারণ বড়দি অনেকদিন ধরেই ওদের বাড়ি যেতে বলছিল। তাই আজকে শুভদিনে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য চলে গিয়েছিল ওদের বাড়ি। আগের দিন রাতেই আমরা বেরিয়ে দিদির জন্য একটা গিফট কিনে নিয়েছিলাম। যদিও আমাকেও যেতে বলেছিল তবে আমার বিশেষ কিছু কাজের জন্য আমি যেতে পারিনি। শুভায়ন সেখানে পৌঁছে দেখে, জামাইবাবুও আগের দিন রাতেই বাড়ি ফিরে এসেছে। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, বড়দির বর কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকে। দিদিকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য কিছু না জানিয়ে তিনিও হাজির। মানে, দিদির কাছে ডবল সারপ্রাইজ। শুভায়ণ যে গিফ্ট টা নিয়ে গিয়েছিল সেটা দিদিকে দেয়। তারপর দিদি ওকে দেখায় কে কি গিফ্ট দিয়েছে। জামাইবাবু দিদিকে একজোড়া রূপোর পলা দিয়েছিল, দিদির শাশুড়ি একটা থ্রি পিস দিয়েছিল, আর শুভায়ণ নিয়ে গিয়েছিল একটা শাড়ি আর পেস্ট্রি।
দিদি আর দিদির শ্বাশুড়ি মা সকালবেলায় কালীবাড়ি চলে গিয়েছিল পূজো দেওয়ার জন্য। পুজো ছেড়ে বাড়ি ফিরে বাড়ির সবাই মিলে দিদির জন্য দুপুরের খাবার রান্না করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। দিদির শাশুড়ি, শ্বশুরমশাই ও বর সবাই মিলে রান্না ঘরে ঢুকে দিদির পছন্দমতো রান্না করছিল। দিদির শ্বাশুড়ি মা খুব ভালো রান্না করেন। যদিও আমি সেই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করিনি। তবে সকলের কাছে শুনেছি। ওনার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল, আমাদের এনগেজমেন্টের দিন। দিদির বাড়ির সকলেই খুব ভালো এবং মিশুকে। বিশেষ করে দিদির শ্বশুরমশাই। মানুষটা এতো ভালো যে প্রশংসা করতেই হয়। আর দিদির শ্বাশুড়ি মা কোনো একটি কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে। শ্বশুর মশাই এখন বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারেন না। তাই দিনের বেশিরভাগ সময়টাই দিদি তার শ্বশুর মশায়ের সাথেই সময় কাটাই। যার ফলে এই দুই বৌমা আর শ্বশুর মশায়ের খুব মিল। দুজনেই সারাদিন খুব মজা করে সময় কাটাই। জ্যাঠামশাইও খুবই রসিক মানুষ। মানুষজনকে হাসাতে খুব ভালোবাসে। সেই সাথে দারুন গান করে।
অবশেষে দুপুর বেলা সুন্দর করে সাজিয়ে দিদিকে খেতে দেওয়া হয়। বাঙালি ঘরে জন্মদিন পালন মানেই পায়েস থাকবেই। পায়েস ছাড়া আমাদের জন্মদিন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই ভাত খাওয়ার আগে বাড়ির সব বড়রা দিদিকে ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করছিল আর সেই সাথে পায়েস খাইয়ে দিচ্ছিল। এই আশীর্বাদ করব আমাদের কাছে অনেকটা মূল্যবান। বড়দের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই আমরা আগামী জীবনের দিকে এক পা , এক পা করে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আশীর্বাদ পর্ব শেষে দিদি তার পছন্দমতো খাবারগুলো পেয়ে তৃপ্তি সহকারে খেয়েছিল।
এরপর বিকেল বেলা আমার হবু বর কেক কিনে এনেছিল। সেখানে কেক কাটিং শেষ করে, রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়েছিল বাবার বাড়ি আসার উদ্দেশ্যে। সঙ্গে জামাইবাবুও এসেছিল। কৃষ্ণনগরে বাবার বাড়ি আসার পর দুই বোন চলে গিয়েছিল আমার শ্বশুর বাড়ি। আমি ওরা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই ঐ বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।সেখানে মামনি ওদের জন্য রান্নাবান্না করে রেখেছিল। সেই সাথে কেক কিনে আনা হয়েছিল। সেখানেও তাদের কেক কাটিং হয়। তারপর রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে ওরা বাড়ি ফিরে আসে।
ছোট জনের মুখে অনেক পিম্পল বেরিয়েছে তাই ক্যামেরার সামনে আসতে চায়নি। আমিও জোর করিনি। যাইহোক এভাবেই আজকের দিনটা কেটেছে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
কাকি শাশুড়ি দুই মেয়ের জন্মদিনে মুহূর্ত শেয়ার করে নিয়েছো। দুজনকেই জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা। দুই বোনেরই একই দিনে জন্মদিন হলে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগে। এরকমটা আমি অনেকের বাড়িতেই দেখেছি দুই ভাই বোনের বয়সের পার্থক্য থাকলেও জন্মদিনটা একই দিনে পড়ে। এরকম জন্মদিনে গিয়ে ভীষণ মজা হয়। জন্মদিনের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করে নেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit