বিনোদিনী পার্কে ঘুরতে যাওয়া

in hive-120823 •  4 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও একটি দিনের গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

গত পোস্টের শেষে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে আমরা কিছু খাওয়ার খেয়ে নিয়েছিলাম। তারপর ট্রেনের টাইম যেহেতু অনেকটাই দেরিতে ছিল তাই আমরা ঠিক করেছিলাম রানাঘাটের একটি পার্কে যাব। এই রানাঘাটে অনেক পার্ক রয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্ক হলো 'অবকাশ পার্ক'। সেই পার্কেও আমরা আগে ঘুরতে গিয়েছিলাম। অবকাশ পার্কে ঘুরতে যাওয়ার গল্প গুলো না হয় অন্যদিন শেয়ার করব। তবে সেই দিন আমরা ঠিক করেছিলাম বিনোদিনী পার্কে ঘুরতে যাব। কারণ পরীক্ষার সেন্টার থেকে ওটাই কাছাকাছি ছিল। সেইমতো আমরা একটা টোটো ঠিক করে নিয়েছিলাম। পরীক্ষা সেন্টার থেকে বিনোদিনী পার্কে যেতে মাথাপিছু কুড়ি টাকা করে ভাড়া পড়েছিল।

1000277587.jpg

এরপর সেখানে পৌঁছে আমরা বাইরেই বেশ কিছু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম তাই আমার ব্যাগে একটা মোটা বই ছিল, সেই সাথে জলের বোতল, ছাতা ইত্যাদি ছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই ব্যাগের ওজন অনেকটাই ছিল। তবে পরীক্ষা দেওয়ার পর মাথা থেকে অনেকখানি বোঝা নেমে গেলেও শারীরিকভাবে একটু দুর্বলই ছিলাম। কারণ সারাদিন বড্ড ধকল গেছে। তাই না বলতেই শুভায়ন আমার ব্যাগে দখল নিয়ে নিয়েছিল। যাইহোক ফটো তুলে আমরা টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। টিকিটও মাথাপিছু কুড়ি টাকা করে পড়েছিল। তারপর ভিতরে ঢুকতে যাবো এমন সময় এখানকার সিকিউরিটি গার্ড আমাদের আটকে দেয় এবং বলে, "ট্রান্সপারেন্ট বোতল এবং খাবার জিনিস নিয়ে ভিতরে ঢোকা যাবে না। সেই সমস্ত কিছু তাদের কাছে জমা রেখে যেতে হবে। এই বিষয়টা আগে জানা ছিল না যার ফলে ভেবেছিলাম ভিতরে ঢুকে একটু কিছু খেয়ে নেব, তাই বেশ কিছু খাবার বাকি ছিল। তবে সেই সমস্ত কিছুই সেখানে জমা রেখে তারপর ভিতরে ঢুকতে হয়েছিল।

1000277583.jpg

ভিতরে ঢুকে তো আমরা অবাক। খুব সুন্দরভাবে পার্কটা সাজানো ছিল। পার্কের একদিকে মিশরীয় আদলে বিভিন্ন স্ট্রাকচার তৈরি করা হয়েছে। সেখানকার দেওয়ালে হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে অনেক কিছু লেখা ছিল। তাছাড়া সেখানে sphinx এর একটা মূর্তিও ছিল। এই sphinx কি জানেন তো! মিশরীয়রা বিশেষ করে সেখানকার যে পিরামিড গুলো রয়েছে সেগুলোর রক্ষাকর্তা হল এই sphinx । এটা ভীষণই পাওয়ারফুল ও এটার মানুষের মত মুখ এবং সিংহের মতো দেহের আকৃতি। এত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখার পর ছবি তোলা থেকে নিজেকে কি বিরত করা যায়! তাই চটজলদি আমরা বেশ কিছু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। এই sphinx এর সাথে ফটো তুলতে কিন্তু ভুলিনি।

1000277585.jpg

সেখানে যেমন বড়দের জন্য আলাদা জায়গা ছিল ঠিক তেমনি ছোটদের জন্যেও একটি পার্ক ছিল। সেখানে সব ছোট বাচ্চারা খেলা করছিল। আর আমরা পুরো পার্কটাকে ঘুরে দেখছিলাম। জায়গাটা সত্যিই খুব সুন্দর ছিল। আমি আর আমার সেই বান্ধবী অনেক ফটো তুলেছিলাম। আর আমাদের ক্যামেরাম্যান ছিল শুভায়ন। শুভায়ন তেমন ফটো তুলতে পছন্দ করে না। তবে আমার পাল্লায় পড়ে এখন একটু ফটো তোলে। তবে নিজের ফটো না তুললেও আমাকে কিন্তু অনেক ফটো তুলে দেয়। শুধুমাত্র পেট টা শান্ত থাকলেই সারাদিন ধরে ফটো তুলে দিতে পারে। সেখানে একটা ফুড কর্নারও ছিল। যদিও দামটা একটু বেশি ছিল। তবে আমরা সেখান থেকে হালকা কিছু খাবার খেয়েছিলাম। সেসব ছবি আর আমার ফোনে নেই।

1000277589.jpg
সেখানে কয়েকটা দোলনাও ছিল। ছোটদের নাকি বড়দের তা বলতে পারব না তবে আমরা চড়েছিলাম। ছোটবেলায় দোলনা চড়তে কি যে ভালবাসতাম! তাই এখনো দোলনা দেখলেই গিয়ে বসে পড়ি। দোলনা চড়ে একটা শেডের নিচে গিয়ে বসেছিলাম। সেই জায়গাটা এমনভাবে ডেকোরেট করা হয়েছে যেন কোন স্টেশনে বসে রয়েছি। কারণ সামনেই ছোট রেল ট্রাকে রেল গাড়ি চলছিলাম। মানে বাচ্চাদের জন্য এইরকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এইভাবেই খুব সুন্দর একটা দিন আমরা কাটিয়েছিলাম। তারপর ট্রেনের টাইম মতো আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম।

1000277591.jpg

এই ভাবেই দিনটি কেটেছিল। তবে সেই দিন শুভায়ন না থাকলে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যেত। তাই এই ছোট ছোট বিষয়গুলোই জোড়া লেগে পরবর্তীকালে একটা সম্পর্কের সূচনা হয়, যেটা বর্তমানে আইন সম্মতভাবে বিধিবদ্ধ হয়েছে এবং কিছু মাসের মধ্যে সেটা সামাজিক স্বীকৃতির পর্যায়ে পৌঁছতে চলেছে।

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...