বান্ধবীর বিয়েতে কাটানো মুহূর্ত

in hive-120823 •  6 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।

IMG_20250716_221223.jpg

আজকে কি পোস্ট লিখব সেটা একদমই ভেবে পাচ্ছিলাম না। ফোনে গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎই চোখে পরলো বান্ধবীর বিয়ে কিছু ছবি।আজকে সেই বান্ধবীর বিয়ের কিছু মুহূর্ত আপনাদের সামনে শেয়ার করে নেব। ফোনে ছবি তুলে রাখলে অনেক সুবিধা হয়। অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। আবার অনেক সময় কাজে লাগে ছবি গুলো। এই বান্ধবী আমার ছোটবেলাকার বান্ধবী। ওর নাম পিয়ালী। আমাদের দুজনেই একই পাড়াতে বাড়ি। আমার বাড়ি সমস্ত অনুষ্ঠানে আমি ওকে নিমন্তন্ন করতাম ।সেটা বিয়ের আগেই হোক কিংবা বিয়ের পরে। তবে সমস্ত কাজ ফেলে ও কিন্তু আমার বাড়ির সমস্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতো। এই গুণটা ওর খুব ভালো ছিল। তবে আমাকে কেউ নেমন্তন্ন করলে আমি লজ্জায় একদম একা একা যেতে পারতাম না। গত বছরই ওর বিয়ে হয়ে গেল সালটা ছিল ২০২৪ জানুয়ারি মাসে।

IMG_20250716_221129.jpg

পিয়ালী কে আমার বাড়ির সকলেই চেনে। আমার সেজো বোনের ভীষন ইচ্ছে ছিল পিয়ালীর বিয়েতে নেমন্তন্ন খাওয়ার। বোনের সাথে যতবার পিয়ালী সাথে দেখা হয়েছে ঠিক ততবারই বলেছে দিদি তোমার বিয়েতে আমাদের নেমন্তন্ন করবে তো। আমার বোনেরা বিয়ে বাড়ি খাওয়ার থেকে সাজতে ভীষণ পছন্দ করে। মেজ বোন আবার নাচানাচি করতে ভীষণ পছন্দ করে। তবে আমার কোনটাই ভালো লাগে না ।আমি যতটা পারি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু বান্ধবী বলে কথা বিয়ের আগের দিন আইবুড়ো ভাত থেকে নেমন্তন্ন ছিল। ওই যে বললাম আমি একা কোথাও যেতে পারি না। সকাল থেকে বারবার ফোন করছিল তাই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া সেরে বাধ্য হয়েই দুপুরবেলায় গিয়েছিলাম ওর সাথে একটু দেখা করতে। ওর আইবুড়ো ভাতের সমস্ত পর্ব খুব সুন্দরভাবে মিটে গিয়েছিল ।এরপর রাতে মেহেন্দি তে ও যাবার জন্য বলেছিল। কিন্তু একা একা কোথাও যেতে একদমই বোর লাগে। তবু মেহেন্দি তে রাতের বেলায় গিয়েছিলাম মাত্র এক ঘণ্টা থেকে খাওয়া-দাওয়া সেরে খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এসেছিলাম।

IMG-20240131-WA0033.jpg

এরপর ছিল পরের দিনকে লজে বিয়ের অনুষ্ঠান। সেদিনও সকাল থেকে আমার যাবার কথা ছিল। কিন্তু আমি গিয়েছিলাম দুপুর তিনটে নাগাদ। দুপুরের খাবার সেরে আবার সাথে সাথে বাড়ি চলে এসেছিলাম। বিকেল বেলায় জল সাজতে যাবার কথা ছিল। কিন্তু আমি যায়নি। দুপুরের পর এসে রাতে যাওয়ার জন্য সাজুগুজু করতে হবে । আমার বোন সে বিকেল বেলায় চলে এসেছিল মামার বাড়িতে। আমি সেদিন পার্লারে সেজে ছিলাম। আমার বর তখন গ্রামের বাড়ি তরণী পুরে ওখানেই জব করত। তাই রাত্রিবেলায় বিয়ের নেমন্তন্ন খাবে বলেই বাড়িতে এসেছিল। দুই বোনের সাজ কমপ্লিট হয়ে গেলে আমরা প্রথমেই দুজনে চলে গিয়েছিলাম লজে নিমন্তন্ন খেতে। আমার বর আর শ্বশুর মশাই পরে গিয়েছিল। শাশুড়ি মা কোথাও যেতে চাই না। তাই উনাকে আর জোর করিনি।

যাইহোক দুই বোনে লজে নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে দুজনেই ইচ্ছামত কিছু ছবি তুলে নিয়েছিলাম। সেদিন বান্ধবী এতই ব্যস্ত যে আমাকে সময় দেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। আসলে বিয়ে নিয়ে প্রত্যেকটা মেয়ে খুবই এক্সাইটেড থাকে। তাই সেদিন আর ওর সাথে ছবি তোলা হয়নি ।এমনকি কথা বলার ও সুযোগ হয়নি। আমি গিয়ে দেখি বরযাত্রী চলে এসেছে। লজে পুরো ভিড় জমে রয়েছে। যাইহোক আমরা সকলেই সময় মতো খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়েছিলাম। শীতকালে বিয়ে হলেও আকাশে ছিল মেঘ। রাতের বেলায় শুরু হয়েছিল ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। আমরা বৃষ্টি হবার আগেই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলাম ।কারণ লজ থেকে আমাদের বাড়ি প্রায় অনেকটাই। অনেক রাতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যে আসতে ভয় লাগে। আর বান্ধবীও আমাকে জোর করে বলেনি যে তুই থেকে যাস।ওর ব্যবহার দেখে বর ভীষণ রেগে গিয়েছিল।

আসলে ছোটবেলার বান্ধবী হলেও সকলের ব্যবহার একই রকম হয় না। আমি নিজের বিয়েতেও আমি সকলের থেকে ওকে বেশি সময় দিয়েছিলাম। যাইহোক সেদিন এত সুন্দর করে সেজেগুজে গিয়ে ক্যামেরার সামনে ছবি তুলব বলেই গিয়েছিলাম। বাড়িতে এসে যখন শাশুড়ি মা কে বললাম শাশুড়ি মা আমাকে বোঝানোর জন্য বলেছিল বান্ধবী বিয়ের দিন সকলের সাথে একটু ব্যস্ত থাকতেই পারে, এর জন্য রাগারাগি করতে নেই। এমন করে হয়তো আর কেউ কখনো আমাকে বোঝায় নি। যাইহোক বান্ধবী বৌভাতের মূহুর্ত আপনাদের মাঝে পরে শেয়ার করে নেব।

আজ এইখানেই শেষ করছি ।আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আগামীকাল।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...