নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন।। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমার পিসতুতো দাদার বউ অর্থাৎ আমার বৌদির সাথে কাটানো কিছু মুহূর্ত।
জুন মাসের ১৩ তারিখে আমি আর বৌদি মিলে চলে গিয়েছিলাম সোনার দোকানে। অনেকদিন আগে থেকেই বৌদি ঠিক করেছিল আমার সাথে একটু সোনার দোকানে যাবে।। অন্য কারো সাথে বৌদি যেতে চাইছিল না। আমার বাড়ির লোকজন সবার কাছে আমার চয়েজ বেস্ট। এ কারণে সবাই কোন কেনাকাটা করতে গেলে আমাকে নিয়ে টানাটানি করে।
এমনকি আমার ছোট মামা বাড়ি করছে। এত দূর থেকে মাঝেমধ্যেই ভিডিও কলে আমার সাথে পরামর্শ করে। ঘরের কোন রং আর কোন টাইলস দিলে ভালো হবে, সানমাইকার কি কালারের নেবে। সেটা পর্যন্ত আমার সাথে ভিডিও কল করে দেখে শুনে কেনে।
তো যাই হোক, বৌদির সাথে অনেক আগে থেকেই প্ল্যান ছিল। সেদিন কে আমাদের দুজনের সময় ছিল বলে। সেদিনকে আমরা দুজন মিলে বেরিয়েছিলাম। সাথে গিয়েছিল বৌদির ছেলে নিলয়। হৃদয়ের কথা এর আগে আপনারা অনেক শুনেছেন আমি পোস্টে অনেকবার ওর নাম উল্লেখ করেছি। দুপুরবেলা হলে বৌদি ওকে নিয়ে যেত না বিকেল বেলা বলেই নিলয়টি নিয়ে বেরিয়েছিল এতে নিলয়ের একটু ঘোড়াও হয়ে গেল। আমরা টোটো করে চলে গেলাম আমাদের কৃষ্ণনগর পুলিশ স্টেশনের অপজিটে আধুনিক জুয়েলার্সে এই জুয়েলার্স এর একটা মেন আউটলেট রয়েছে বগুড়াতে আর এদের আরেকটা আউটলেট কৃষ্ণনগরে অবস্থিত।
এদের দোকান থেকে আমি অনেক ধরনের সোনার জিনিস কিনেছি এমনকি যাচাই করে দেখেছি, একেবারে huid /hallmark / 916. এই বিষয়টি ঠিক করার জন্য আমি প্লেস্টোর থেকে একটি অ্যাপস ডাউনলোড করেছিলাম। অ্যাপস এর নাম BIS care. আপনারা এই অ্যাপসে গিয়ে চেক করে নিতে পারেন।
যাই হোক টোটো করে আমাদের যেতে ১০ মিনিট মতো লাগলো। আমার আর বৌদির মিলে ৩০ টাকা নিল।
যারা বর্তমানে সোনার জিনিস কিনছেন। তারা বুঝবেন এখন আমাদের দেশের সোনার দাম কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ছয় সাত মাসের মধ্যে সোনার দাম যে এতটা বেড়ে যাবে তা কেও কল্পনা করতে পারেনি। আমিও এই সময় আমার সমস্ত সোনার জিনিসগুলো তৈরি করছি। এ কারণে প্রচন্ড পরিমাণে গায়ে লাগছে। আগে থেকে যদি সবকিছু করা থাকতো এত টাকা পয়সা খরচা হতো না। আমাদের এখানে এখন এক গ্রাম সোনার দাম ৯৪০০/- থেকে ৯৫০০/- এর কাছাকাছি। এর থেকে বেশিও হয়ে যাচ্ছে। গত বছরে ৬৫০০/- করে প্রতি গ্রামে সোনা কিনেছি। আর এই বছর এই হাল।
বৌদি ভেবেছিল কানবালা কিনবে। কিন্তু সোনার দোকানে গিয়ে হয়ে গেল অন্য ডিসিশন। বাড়ির বউ মেয়েরা অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে এই ছোট্ট ছোট্ট আশাগুলো পূরণ করে । তার মধ্যে আমার বৌদিও একজন। বাড়ির ছেলেরা বলতে গেলে পুরুষ মানুষ সোনা অথবা এই অলংকার বিষয় নিয়ে অতটা মাতামাতি করে না। কারণ এসব ওদের মাথার উপর দিয়ে যায়। মেয়েদের এসব ব্যাপারে যে কি পরিমাণে শখ থাকে তা শুধুমাত্র মেয়েরাই জানে।
বৌদিরা খুব শখ ছিল এরকম পেঁচানো টাইপের একটা বালা কিনবে। অনেক কষ্টে জমিয়ে জমিয়ে একটা বড় এমাউন্ট দাঁড় করিয়েছিল। বৌদি বলে বৌদির কাছে টাকা আছে জানলে সেটা নিয়ে দাদা ব্যাংকে থুয়ে দেয় অথবা জমিতে লাগিয়ে দেয়। আমার দাদা কিন্তু একজন শিল্পী। বাবার মতন বলা যেতে পারে। এর সাথে তারা চারিদিকে প্রচন্ড ইনভেস্ট করে রাখে। ভবিষ্যতের জন্য। তাই টাকার কথা শুনলেই দাদার মাথায় শুধু ইনভেস্টের কথাই আসে। এ কারণে বৌদি টাকা পয়সা চুপিচুপি জমিয়ে এটা ওটা কিনতে থাকে।। সেদিনকে বৌদি যে বালাটা কিনলো ওটার দাম পরল ৯১০০০ টাকা।অর্থাৎ এখনকার ভারতীয় দামে ৯১০০ স্টিম।
বালাতে ৮ গ্রাম ৮০০ মিলি সোনা। এর সাথে ছিল GST+ making charges. সব মিলিয়ে ওই দামটা পড়েছিল। অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে নিজের সব পূরণ করতে পেরে বৌদি খুব আনন্দ পেয়েছে। আর এর সাথে বৌদির আনন্দ দেখে আমিও অনেক আনন্দ পেয়েছি।
তবে সোনার দাম যেভাবে বাড়ছে ,তাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে সোনা কেনা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। এখন যাদের বাড়িতে সোনা বেশি, তারা সোনায় সোহাগা। আগে থেকে যারা কিনে রেখেছে, তারা ই লাভ করেছে। যাই হোক আজকে এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন।