স্কুলের স্মৃতি এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন।

in hive-129948 •  9 days ago 

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসি, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আজ আপনাদের সাথে আমার স্কুল জীবনের একটি অধ্যায়ের কিছু স্মৃতি তুলে ধরব।


14271.jpg

Photo Source

আমার মায়ের খুব শখ ছিল আমাদেরকে ঢাকা শহরের স্কুলে পড়াবেন। ঢাকা শহরে থাকলে আমরা ভালো স্কুলে পড়তে পারব, আর তিনিও নিজের চিকিৎসা করাতে পারবেন। এমন লক্ষ্যে আমি যখন ক্লাস সেভেনে ভর্তি হব তখন আমরা ঢাকায় চলে আসি।

মিরপুর চিড়িয়াখানা স্টাফ কোয়ার্টারে আমাদের এক ফুফু থাকতেন। সেখানেই তিনি আমাদের জন্য একটি বাসা ভাড়া করে দেন। চিড়িয়াখানা বোটানিক্যাল গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়ে আমি ভর্তি হই। বোটানিক্যাল গার্ডেনের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতাম।

স্টাফ কোয়ার্টারে খেলাধুলার জায়গার অভাব ছিলনা। সেখানে আমার বয়সী ছেলেপেলেও ছিল প্রচুর। সমবয়সীরা মিলে আমরা খেলাধুলা করতাম। কখনো কখনো চলে যেতাম পাশে থাকা বোটানিক্যাল গার্ডেনের বিশাল মাঠ। পরের বছর অবশ্য সরকার বোটানিক্যাল গার্ডেনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর কাঁধে তুলে দেয়। আর আমাদেরও বোড়ানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়।

আমার সাথে ক্লাস সেভেনে আমার এক মামা ভর্তি হয়েছিল। প্রথম প্রথম সহপাঠীরা বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করত। যাইহোক, আমার মামার অন্যদের সাথে মেশার গুণ খুব বেশি ছিল। তাই সহজেই ক্লাসে উনার বন্ধু বেশি হয়ে যায়। যেহেতু আমি উনার ভাগিনা, তাই আমি হয়ে যাই জাতীয় ভাগিনা। শেহ পর্যন্ত এমন হয়েছে, আমার অনেক ক্লাসমেট আমার নামই ভুলে গেছে।

ওই স্কুলে দুটি বছর ছিলাম আমি। স্কুল শুরুর আগে মন চাইলেই চলে যেতাম বোটানিক্যাল গার্ডেন। সেখানে থাকা কৃত্রিম লেকটি ছিল আমার খুব প্রিয় একটি স্থান। আমি নদীমাতৃক একটি জেলায় বড় হয়েছি। তাই স্বাভাবিকভাবেই এধরনের স্থানগুলো আমাকে আকর্ষণ করত বেশি। দোতলায় আমাদের ক্লাস রুম থেকেও গার্ডেন এর অংশবিশেষ দেখা যেত। স্টাফ কোয়ার্টারের বেশিরভাগ ভবন টিনশেড হওয়ায় সব সময় গার্ডেন থেকে বাতাস আসতো। ক্লাসরুম সবসময় থাকতো ঠান্ডা।

ঢাকা শহরের সরকারি স্কুলগুলো যেমন হতো, এই স্কুলটি তেমন ছিল না। তবুও শীতল, শান্ত, নির্মল পরিবেশের জন্য আমার খুব ভালো লেগেছে স্কুলটি। একটা সময় নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্কুল বদল করার। বিষয়টা ঠিক এমন নয়। জীবনে এমন কিছু নেমে এসেছিল, যার কারনে আর ঢাকা শহর থাকার ইচ্ছা ছিল না। তাই যখন ক্লাস নাইনে উঠবো, তখন ঢাকা শহর ছেড়ে আমাদের গ্রামে ফিরে একটি মফঃস্বলের স্কুলে ভর্তি হই। সেই গল্প না হয় আরেকদিন বলবো। ধন্যবাদ সকলকে।


Royal Art.png


IMG_5055.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order: