আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার জেনারেল রাইটিংটি দেখে আসি যে কি বিষয় নিয়ে লেখলাম। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমার জেনারেল রাইটিং এর বিষয় হলো "আমরা "ইউজটু" কিনা সেটা বুঝার কিছু কৌশল?"

![against-light-7572922_1280.jpg](https://cdn.steemitimages.com/DQmUVutURDgs3mqxS6UNBHMZzAdsMdvWyrZiE3NoLrfkYvm/against-light-7572922_1280.jpg) [source](https://pixabay.com/photos/against-light-summer-silhouette-7572922/)

আজকের বা পরিস্থিতি আমাদের চারপাশে একের পর এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে, তখন আমরা অনেক সময় নিজেদের কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, কী করছি, বা আমাদের জীবনে কী আসলে ঘটছে—এগুলো নিয়ে কনফিউজড হয়ে পড়ি। এর মাঝে একটা শব্দ আছে, যা প্রায়ই আমরা শুনে থাকি: "ইউজটু"। কিন্তু আমরা কি সত্যিই জানি যে আমরা কখন "ইউজটু" হয়ে যাচ্ছি? কীভাবে বুঝবো আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছেছি? এই ব্লগে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আদ্রুত বদলে যাওয়া পৃথিবীতে, অনেক সময় আমরা নিজের সম্পর্কে কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। বিশেষত যখন জীবন লোচনা করব।

প্রথমেই বুঝে নেয়া দরকার "ইউজটু" হওয়ার মানে কী। "ইউজটু" শব্দটি সাধারনত কোনো কিছু বা কারো সাথে অভ্যস্ত হওয়ার অনুভূতি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বোঝায় যে, আগে কিছু একভাবে করা হয়েছে, এবং এখন সেটি এতটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে, তার কোনো গুরুত্ব আর খেয়াল রাখার প্রয়োজন মনে হয় না। সংক্ষেপে, "ইউজটু" হতে মানে হল: আমরা এমন কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, যা আর আমাদের জন্য নতুন বা চ্যালেঞ্জিং নয়। আমরা যখন কোনো নির্দিষ্ট কাজ বা আচরণে অভ্যস্ত হয়ে যাই, তখন সেটি রুটিনে পরিণত হয়ে যায়। রুটিন, একসময় আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। যদিও প্রথম দিকে আমরা কোনো কাজ শুরু করলে সেটা আমাদের জন্য নতুন ও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে একসময় আমরা তার সাথে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিদিন সকালে কাজের জন্য উঠতে, সাপ্তাহিক বাজার করতে, অথবা প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে জিমে যাওয়ার মতো অভ্যাসগুলোর সাথে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাই। এসময় আমরা আর ভাবি না, "আজ কেন উঠতে হবে?" বা "আজ কেন বাজার করতে যাব?" বরং আমরা অনুভব করি, “এটা আমার জীবনের অংশ।” যদি কোনো দিন এসব কাজ বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমরা অনুভব করি কিছু একটা মিস হচ্ছে।

আমরা যখন জীবনযাত্রা, কাজ বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে চাপের মধ্যে থাকি, তখন একসময় চাপও আমাদের জীবনের অংশ হয়ে যায়। অর্থাৎ, যখন আমরা শখের কিছু করি বা কোনো কারণে কিছু না কিছু চাপ নিয়ে থাকি, তখন প্রথমদিকে সেটি আমাদের বিরক্তির কারণ হতে পারে, কিন্তু কিছুদিন পর সেটি আমাদের পক্ষে এমন এক অভ্যাস হয়ে যায় যা আমরা আর খেয়ালও করি না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব, আর সামাজিক সম্পর্কের চাপে আমরা খুব সহজেই "ইউজটু" হয়ে যেতে পারি। একসময় আমরা নিজেরাই ভাবতে পারি না, এই চাপগুলো কি আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে কোনো প্রভাব ফেলছে না? যদি আমরা দীর্ঘসময় ধরে এই ধরনের চাপ বহন করি এবং অনুভব করি যে, আমরা এতে আর অস্বস্তি অনুভব করছি না, তবে তা আমাদের "ইউজটু" হয়ে যাওয়ার একটি লক্ষণ।

একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা সমস্যা যদি আমাদের জীবনের অংশ হয়ে যায়, তবে আমরা সেই পরিস্থিতি বা সমস্যার প্রতি কম প্রতিক্রিয়া দেখাই। সাধারণত, যদি কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, আমরা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। কিন্তু যদি আমরা সেটি বারবার অভিজ্ঞতা করি, তবে আমাদের শারীরিক বা মানসিক প্রতিক্রিয়া কমে যেতে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো অফিসের মিটিংয়ে যেকোনো ধরনের ভুল করলে প্রথমদিকে হয়তো আপনি খুব নার্ভাস হয়ে পড়বেন, কিন্তু বারবার এটি ঘটলে, একসময় সেটি আপনার কাছে কোনো বড় ব্যাপার মনে হবে না। এটি প্রমাণ করে যে, আমরা সেটি ইউজটু হয়ে গেছি—অথবা সমস্যাটির সাথে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।যখন আমরা কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা সম্পর্কের মধ্যে থাকি এবং সেটা আমাদের জন্য নিয়মিত হতে শুরু করে, তখন আমাদের আবেগও কিছুটা নমনীয় হয়ে যেতে পারে। মানে, আমরা সেই পরিস্থিতি বা ব্যক্তির প্রতি অনুভূতির পরিবর্তন করি। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে, প্রথমদিকে আমরা চমকে যাই, বিরক্ত হই, বা দুঃখিত হই, কিন্তু যখন এই আচরণবারবার ঘটতে থাকে, তখন আমরা অনুভব করতে শুরু করি, “এটা তো আমার জন্য নতুন কিছু নয়।” এখন, আমরা আর তেমন অনুভূতি দেখাতে পারি না। আমাদের মধ্যে আগের মতো আবেগের তীব্রতা নেই, এবং পরিস্থিতি সহজে উপেক্ষা করা হয়ে যায়। এটি আসলে "ইউজটু" হয়ে যাওয়ার লক্ষণ।

আপনার জীবনে কোনো পরিবর্তন বা নতুনত্বের অনুপস্থিতি হতে পারে আরেকটি লক্ষণ, যা জানায় যে আপনি "ইউজটু" হয়ে গেছেন। যখন আমরা এমন কিছু রুটিন বা কাজের মধ্যে আটকে যাই, যা আমাদের মানসিক এবং শারীরিক উন্নতি বা কোনো ধরনের সৃজনশীলতা তৈরি করার সুযোগ দেয় না, তখন আমরা বুঝতে পারি যে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। উদাহরণস্বরূপ, হয়তো আপনি একসময় নতুন কিছু শিখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এখন আপনি শুধু আগের রুটিনের মধ্যেই আটকে রয়েছেন। এমনকি, জীবনের ছোট ছোট পরিবর্তনগুলিও আমাদের দৃষ্টিতে আর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না, কারণ আমরা "ইউজটু" হয়ে গেছি। যখন আমরা কোনো কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে যাই, তখন আমাদের আগের চাহিদাগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। একটি বিষয় বা অভ্যাস আমাদের জন্য অভ্যাস হয়ে গেলেই, আমরা আর সেভাবে এর প্রতি আকৃষ্ট হই না। উদাহরণস্বরূপ, একটি নতুন জায়গায় ভ্রমণ করা, নতুন কোনো শখ তৈরি করা—প্রথমদিকে আমাদের এসব নিয়ে উত্তেজনা থাকে, কিন্তু যদি আমরা এক জায়গায় স্থির হয়ে পড়ি, তাহলে সেগুলো আমাদের কাছে পুরনো হয়ে যায়। আমাদের চাহিদাগুলো ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে, এবং আমরা "ইউজটু" হয়ে গিয়ে জীবনকে আরও একঘেয়ে মনে করি। এটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যে, আমরা যখন কোনো অভ্যাস বা পরিস্থিতির সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাই, তখন আমরা নিজের ভিতরে পরিবর্তন আসা সত্ত্বেও তা লক্ষ্য করি না। আমরা শারীরিক বা মানসিকভাবে যতই পরিবর্তন হই না কেন, আমরা সেগুলো নিয়ে সচেতন হতে পারি না। আবার, নিজের মধ্যে কিছু বদলানোর উদ্যোগ নিতে পারি না। আপনি যদি মনে করেন, আপনার জীবন থেকে নতুনত্ব চলে গেছে, আবেগের প্রতি উদাসীন হয়ে গেছেন, অথবা আপনার পুরনো অভ্যাস এখন আর কোনো প্রভাব ফেলছে না, তবে আপনি সম্ভবত "ইউজটু" হয়ে গেছেন। তবে, এটা আপনার জীবনকে ক্ষতিকর নয়, বরং এক ধরনের ন্যাচারাল প্রসেস হতে পারে। কখনো কখনো, নিজেদের পরিবর্তনের জন্য সচেতন হতে হবে এবং নিজের অভ্যস্ত আচরণ বা পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️ ![image.png](https://cdn.steemitimages.com/DQmVCXLPp9B9okhGSCQjneWESd9xm2axb8Fhs42CLNtyUQw/image.png)